রাজকীয় ও জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে শনিবার (৬ মে) আনুষ্ঠানিকভাবে রাজমুকুট পরিধান করেছেন রাজা তৃতীয় চার্লস। এর আগে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ বাইবেলে হাত রেখে শপথ বাক্য পাঠ করে ব্রিটেনের ৪০তম রাজার দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
রাজার মাথায় যে মুকুটটি শোভা পাচ্ছে এটি ১৭ শতকে তৈরি করা হয়। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ তার জীবদ্দশায় অন্য আরেকটি মুকুট পরতেন। এটি শুধুমাত্র রানির জন্যই তৈরি করা হয়েছিল। তবে ১৯৫৩ সালে রাজ্যাভিষেকে রানিও এই মুকুটটি পরিধান করেছিলেন। মুকুটটি ভারী হওয়ায় শুধুমাত্র অভিষেক অনুষ্ঠানে এটি ব্যবহারের প্রচলন শুরু হয়।
এটি রানি এলিজাবেথের আমলে লন্ডন ব্রিজে সংরক্ষিত ছিল। এলিজাবেথ মারা যাওয়ার পর মুকুটটি সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় এবং এতে কিছু সংস্কার কাজ করা হয়।
এই মুকুটটি তৈরি করা হয়েছে খাঁটি সোনা, রুবির আবরণ, মণি, নীলকান্তমণি, পোখরাজ ও টুম্যালিন ব্যবহার করে।
এদিকে এর আগে রাজ্যাভিষেকের আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে কুইন কনসর্ট ক্যামিলাকে নিয়ে ডায়মন্ড জুবলি কোচে করে বাকিংহ্যাম প্যালেস থেকে ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে আসেন রাজা তৃতীয় চার্লস। তার সঙ্গে ওয়েস্টমিনিস্টারে যোগ দেন প্রিন্স হ্যারি, প্রিন্স উইলিয়াম, প্রিন্সেস কেট মিডেলটনসহ রাজ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
প্রিন্স উইলিয়াম ও তার স্ত্রী রাজকীয় পোশাকে আসলেও প্রিন্স হ্যারি আসেন সাধারণ স্যুটে। তিনি যেহেতু ২০২০ সালে স্বেচ্ছায় রাজ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন, ফলে তাকে রাজ অনুষ্ঠানে সামরিক পোশাক পরার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
চার্লস ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে আসার পরেই শুরু হয় মূল আনুষ্ঠানিকতা। প্রাচীন আমলে যেভাবে রাজ্যাভিষেক হতো চার্লসের ক্ষেত্রেও সেই ধারা অব্যাহত রাখার চেষ্টা ছিল। অনুষ্ঠানস্থল ছিল পুরোনো দিনের আসবাবপত্রে সাজানো। রাজা ও কুইন কনসর্ট ক্যামিলা দুইজনই পরেছিলেন সাদা পোশাক। এছাড়া ছিল ধর্মীয় সংগীত।
নিয়ম অনুযায়ী, রাজা চার্লস প্রথমে অভিষেক চেয়ারে বসেন। এরপর এক এক করে চলে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা। চার্লসের হাতে তুলে দেওয়া হয় ন্যায় বিচারের তরবারি, তার মাথায় দেওয়া হয় পবিত্র তেল। এরপর সর্বশেষ তার মাথায় পরিয়ে দেওয়া হয় মুকুট।