নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার ধামগড় ও লক্ষনখোলা মৌজায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) এর কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ৭৫ একর জমি অধিগ্রহণে মালিকরা তাদের জমির ন্যায্য মূল্য না পেলে একেবারে নিঃস্ব হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন নাসিক ২৫ নং ওয়ার্ড উত্তর লক্ষনখোলার বিশিষ্ট শিল্পপতি ও রপ্তানিকারক তুলা তৈরীর প্রতিষ্ঠান মেসার্স মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ জুয়েল মিয়া।
মোঃ জুয়েল মিয়া গতকাল তাঁর নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজের অফিসে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রেস ক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য এম আখতার হোসেনের সাথে আলাপ কালে একথা বলেন। তিনি বলেন আমরা সরকারের উন্নয়ন মূলক কাজকে স্বাগত জানাই, আমি ২০০৯ ও ২০১০ সালে ধামগড় মৌজায় বিভিন্ন দাগে ১০২ শতাংশ বাড়ির জমি ক্রয় করিয়া উন্নতমানের রপ্তানি কারক তুলা তৈরির প্রতিষ্ঠান মেসার্স মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ নামক প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। প্রতিষ্ঠানটি দাড় করাতে ঐ সময়ে আমি যমুনা ব্যাংক লিঃ এবং প্রাইম ব্যাংক লিঃ এর কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা ঋণ নেই।
২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর আমার উক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে সকল মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়, ভয়াবহ সেই অগ্নিকান্ডে আমার প্রায় ৩০ কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় চালু করতে আমাকে আবার ঋণ গ্রহণ করতে হয়। ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাটি পুনরায় দাড় করানোর পরপরই জানিতে পারি সরকার নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের অধীনে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এখানে (ধামগড় ও লক্ষণখোলা মৌজায়) ৭৫ একর জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং আমার কারখানাসহ পরবর্তীতে কারখানা বাড়ানোর জন্য ক্রয়কৃত সকল জমি উক্ত অধিগ্রহণের আওতায় পড়ে যায়।
পরবর্তীতে ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর আমি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মহোদয় ও নারায়নগঞ্জ জেলা ভূমি অধিগ্রহণ শাখা এবং ১ নভেম্বর—২০২২ তারিখে নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মেয়র মহোদয় বরাবর মানবিক কারনে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সুবিবেচনা করিয়া জমির বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী জমির ন্যায্য মূল্য পাওয়ার দাবী করে দরখাস্ত করি এবং পূর্বের দরখাস্তের কোনরূপ সাড়া না পেলে পুনরায় গত ৬/৩/২০২৪ ইং তারিখে আবারো একই দাবীতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মহোদয় বরাবর একটি দরখাস্ত করি এবং উক্ত দরখাস্তের অনুলিপি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দপ্তরেও জমা প্রদান করি। বর্তমানে আমার কারখানার জমির পাশের জমি নগদে বেঁচা কেনা হচ্ছে ১২ থেকে ১৩ লক্ষ টাকায়, কিন্তু জমির মৌজা রেট আছে বাড়ি প্রতি শতাংশ ২ লক্ষ ৬২ হাজার ৫ শত টাকা, নাল জমি ৯১ হাজার টাকা এবং জমির বানিজ্যিক মূল্য আছে প্রতি শতাংশ ৫০ হাজার টাকা। এমতাবস্থায় সরকার যদি আমাদের উপর নির্দয় হয় তাহলে আমরা জমির মালিকগন একেবারে নিঃস্ব হয়ে যাবো।
আমি ও জমির মালিকদের একটিই দাবী সরকার যেন আমাদের জমির বর্তমান বাজার মূল্য নির্ধারণ করে জমির ন্যায্য মূল্য পরিশোধ করেন এবং আমাদের একেবারে নিঃস্বতার হাত থেকে বাঁচিয়ে তুলেন। জুয়েল মিয়া এই প্রতিবেদককে আরো বলেন জমির মৌজা রেট নির্ধারণ করেন সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ, আমরা আশা করবো আমাদের জমি অধিগ্রহণে জমির বর্তমান বাজার মূল্যের সাথে তা বিবেচনা করেই যেন সরকার পরবর্তী সকল সিদ্ধান্তগুলো বিবেচনা করেন এবং আমাদের জমির মালিকদের সাথে যেন অমানবিক কোন আচরণ না করেন। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বিগত ২০২১ সালে উক্ত এলাকায় ৭৫ একর জমি অধিগ্রহণের সাইনবোর্ড সাটানোর পরপরই ঘোষণাকৃত অধিগ্রহণের অন্তভূর্ক্ত এলাকার সকল কাজকর্ম ও ব্যবসা বানিজ্য স্থবির হতে থাকে, এই ঘোষণার পরপর উক্ত এলাকায় কেউ কোন গোডাউন বা ঘর ভাড়াও নিতে চাননা বলে জানিয়েছেন একাধিক বাড়ির মালিক, এতে করে বাড়ির মালিকদের প্রচুর লোকসান গুনতে হচ্ছে। বিগত দিনগুলিতে এ সংক্রান্ত বিষয়ে স্থানীয় বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় একাধিকবার সংবাদও প্রকাশিত হয়েছিল।