প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবীতে পথ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবীতে পথ সমাবেশ এই আয়োজন করে সাংবাদিকদের পাঠচক্র গ্রুপ ‘অনুশীলন। শহরের সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিবিদ ও নাগরিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে চলে এই কর্মসূচী। আলোচনা, গণস্বাক্ষর, পারফরমেন্স আর্ট এবং কবিতা আবৃতির মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয় আইনের অপব্যবহারের।
পথ সমাবেশে আলোচকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বী, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি রফিকুল ইসলাম জীবন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়, সুজনের জেলা সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, সিদ্ধিরগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুল, সমগীতের অমল আকাশ, প্রথম আলোর প্রতিনিধি মজিবুল হক পলাশ, সংবাদদাতা গোলাম রাব্বানী শিমুল, বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি সাব্বির আল ফাহাদ, সাংস্কৃতিক কর্মী জহিরুল ইসলাম মিন্টু। সঞ্চালনায় ছিলেন দ্যা ডেইলি স্টারের সৌরভ হোসেন সিয়াম ও আজকের পত্রিকার সাবিত আল হাসান। সভাপতিত্ব করেন অনুশীলনের নির্বাহী সমন্বয়ক আফসানা আক্তার।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বী বলেন, ‘আমাদের দেশে কিছু সাংবাদিক নেতা সকালে উত্তর দিকে যাচ্ছেন, বিকেলে যাচ্ছেন দক্ষিন দিকে। দেশের অন্যান্য পেশাজীবিদের যেমন এক কাতারে দেখার সুযোগ নেই, তেমনি সাংবাদিকদের ক্ষেত্রেও দেখতে হবে তার মস্তক অন্য কারও কাছে বন্ধক আছে কিনা। স্বাধীনতার সময় পাক সেনাদের সহযোগীতার জন্য রাজাকার গঠন করা হয়েছিলো। সেসময় তৎকালীন ঢাবি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এই রাজাকার গঠনের সমর্থন জানিয়েছিলেন। সুতরাং শিক্ষক হলেই তারা জাতির বিবেক এটা ভাবার কোন কারন নেই। যেসব শিক্ষকরা শাসকদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিবৃতি দিচ্ছে, এরা আমাদের দেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে না।
আইন বাতিলের দাবী জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে ভোট দেয়ার স্বাধীনতা ছিলো, সেই কারনেই আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভাবে নির্বাচিত হতে পেরেছিলো। আজকে মানুষের ভোটের স্বাধীনতা নেই, কথা বলা, লেখার স্বাধীনতা নেই। আইন দিয়ে মানুষের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। এই শাসক গোষ্ঠি গলা উঁচিয়ে বলছে দেশে নাকি কোন ভিক্ষুক নেই। তাহলে স্বাধীন দেশে শিশুরা ফুল বিক্রি কেন করছে তা আমরা প্রশ্ন রাখতে চাই। মনে রাখবেন, জনগন সবকিছু জানে ও বুঝে। জনগণকে বোকা ভাবার কোন সুযোগ নেই। এই আইনে যাদের নামে মামলা ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের সবাইকে মুক্তি দিতে হবে। একই সাথে কথা বলার অধিকার কেড়ে নেয়ার এই আইন বাতিল করতে হবে।’
পথসভায় আলোচনা ছাড়াও ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করো’ শিরোনামে শিল্পী অমল আকাশ ও ‘চিৎকার’ শিরোনামে শিল্পী সুমনা আক্তার পারফরমেন্স আর্ট প্রদর্শন করেন। এছাড়া কবিতা আবৃত্তি করেন ভবানী শংকর রায় ও ফারহানা মানিক মুনা।
