বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় প্রেমিকাকে খুন!

নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে নিহত এক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন শহিদুল। কিন্তু হঠাৎ করে বিয়ের চাপ দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাকে কেরানীগঞ্জ নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও হত্যা করে পালিয়ে যান প্রেমিক শহিদুল।

ঢাকার কেরানীগঞ্জ কোনাখোলা এলাকা থেকে অজ্ঞাতপরিচয়ে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ হত্যার ঘটনায় জড়িত মো. শহীদুল ইসলাম (৩৮) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর পুরান ঢাকার জনসন রোডের নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ এ তথ্য জানান ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি জানান, গত ১১ জুন রাতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর কলের মাধ্যমে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর গলায় ওড়না পেঁচানো মরদেহ উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। পরে সিআইডির ক্রাইম সিনের সহায়তায় ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

জানা যায়, নিহত নারী সালমা বেগম (৩৭) খুলনা সদরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পরে তার পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়। পাশাপাশি ঘটনাস্থলের বিভিন্ন আলামত ও তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

তদন্তের এক পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় জড়িত ঘাতকের সন্ধান পায় পুলিশ। পরে সোমবার (১২ জুন) দিনগত রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার পশ্চিম মাসদাইর এলাকা থেকে শহীদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এসপি আসাদুজ্জামান বলেন, নিহত সালমার সঙ্গে শহিদুলের সাত থেকে আট বছর ধরে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। হত্যার এক দিন আগে সালমা খুলনা থেকে শহিদুলের বরিশালের গ্রামের বাড়িতে যান। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে সালমা জানতে পারেন, শহিদুল বিবাহিত। এ তথ্য জানার পর সালমা তাৎক্ষণিকভাবে শহিদুলকে ফোন কল করে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে থাকেন।

তিনি বলেন, নিহত সালমা ডিভোর্সি ও তার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া একটি মেয়ে রয়েছে। পরে শহিদুল কৌশলে সালমাকে ঢাকায় আসতে বলেন। ঢাকায় আসার পর শহিদুল সালমার সঙ্গে ১১ জুন বিকেল ৫টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেখা করেন। রাত ১০টার দিকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে সালমাকে কেরাণীগঞ্জে কোনাবাড়ি এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে শহিদুল জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে প্রথমে সালমাকে ধর্ষণ করেন। পরে সালমার ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করেন। এরপর সালমার মরদেহ যাতে শনাক্ত করা না যায় সেজন্য পাশে থাকা ইটের টুকরা দিয়ে মুখ থেঁতলে চেহারা বিকৃত করে শহিদুল পালিয়ে যান।

এসপি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর শহিদুল বার বার তার অবস্থান পরিবর্তন করে আসছিলেন। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে থাকতেন। অবশেষে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কেরাণীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন