কেউ যাতে ভুয়া পরিচিতি ব্যবহার করতে না পারে সে ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কিংবা মোবাইল নম্বরসহ ফেসবুক আইডি খোলার ক্ষেত্রে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে যথার্থতা যাচাইয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
ফেসবুকের বাংলাদেশ বিষয়ক কর্মকর্তা সুজানা সারোয়ার মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) মন্ত্রীর সঙ্গে সচিবালয়ে তার দপ্তরে বৈঠক করেন।
বৈঠককালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন বলে টেলিযোগাযোগ বিভাগেরেএক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ফেসবুক ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট কিংবা সংবাদ প্রচারের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে।
পাশাপাশি কোনো কোনো ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন ও গুজব ছড়ানোসহ এটির অপব্যবহার ভয়ংকর অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সমাজ কিংবা রাষ্ট্রই নয়, এটি ফেসবুকের জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যাতে কেউ ভুয়া পরিচিতি ব্যবহার করতে না পারে সে ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি) কিংবা মোবাইল নম্বরসহ আইডি খোলার ক্ষেত্রে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে যথার্থতা যাচাইয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ২০১৮ সালে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বার্সেলোনায় প্রথম বৈঠকের ধারাবাহিকতায় গত ৫ বছরে পারস্পরিক সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে বলেন, আমরা এখন দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারছি।
মোস্তাফা জব্বার ফেসবুককে বাংলাদেশের আইন ও বিধিবিধান মেনে চলা ছাড়াও দেশ ও দেশের বাইরে থেকে রাষ্ট্রীয়, সামাজিক এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও সম্মান বিঘ্নিতকর মিথ্যা ও গুজব বা অপপ্রচারমূলক উপাত্ত প্রচার ছাড়াও সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, পর্নোগ্রাফি, জুয়া ও বাংলাদেশের সামাজিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধবিরোধী উপাত্ত প্রচার না করতে অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশ ফেসবুকের একটি বড় বাজার উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় দেশব্যাপী ইন্টারনেটসহ শক্তিশালী টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ন্যায় ফেসবুকের বাংলাদেশে এখাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার সুযোগ রয়েছে।
তিনি কোনো অশুভ শক্তি যেন ফেসবুককে তাদের মিথ্যাচার, অপপ্রচার কিংবা ব্যক্তিগত আক্রমণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে এই ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ফেসবুকের ভুয়া আইডি ব্যবহার করে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাশাপাশি এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তির মাধ্যমে কেউ কেউ প্রতারিত হচ্ছে। ক্ষতিকর কনটেন্ট বন্ধ করতে বিটিআরসি থেকে পাঠানো রিপোর্ট আরও গুরুত্বের সঙ্গে দেখার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বিটিআরসির ডিজিটাল সেল রয়েছে। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠানো অভিযোগগুলো বিটিআরসি যাচাই বাছাই করে ফেসবুককে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠায়। এসব রিপোর্টের বিষয়ে জরুরি কার্যকর উদ্যোগ আরও দ্রুততার সঙ্গে নিয়ে অভিযোগ নিস্পত্তির হার আরও বেশি পরিমাণ হওয়া অপরিহার্য।
এ সময় তিনি জুয়ার সাইটের বিজ্ঞাপনে যাতে ফেসবুক ব্যবহৃত না হয় সে বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখার অনুরোধ জানান।
সুজানা সারোয়ার বলেন, অন্যান্য দেশের পলিসি, আইন আর বাংলাদেশের পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন। আমরা ক্ষতিকর কনটেন্টের বিষয়ে সতর্ক আছি। যে কোনো বিধি-বিধানের ক্ষেত্রে অবশ্যই মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিবেচনায় রাখা উচিত। আমাদের পলিসিতে ঝুঁকিপূর্ণ কনটেন্টের বিষয়ে সচেতন থাকার বিষয়ে সরকার থেকেও বারবার বলা হয়েছে, আমরা সেই আলোকে ব্যবস্থাও নিয়েছি। ভবিষ্যতেও ফেসবুক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।