প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি মাইক্রোসফটের সঙ্গে এআই প্রতিযোগিতায় প্রথম দফায় পরাজয়ের পর এবার নিজেদের ফ্ল্যাগশিপ সার্চ ইঞ্জিনে আলাপচারিতাভিত্তিক এআই যুক্ত করার পরিকল্পনা করছে সার্চ জায়ান্ট গুগল।
“মানুষ কি গুগলকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে বা সার্চের প্রাসঙ্গিকতায় ‘এলএলএম (লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল)’ সম্পৃক্ত করতে সক্ষম হবে? একেবারেই তা ঘটবে।” –মার্কিন বাণিজ্য প্রকাশনা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন গুগল সিইও সুন্দার পিচাই।
গুগল এরইমধ্যে নিজেদের সার্চ ইঞ্জিনে বিভিন্ন এলএলএম সমন্বিত করার বিষয়টি জানিয়েছে। তবে, এবারই প্রথম আলাপচারিতাভিত্তিক ফিচার চালুর পরিকল্পনার কথা বলল কোম্পানিটি।
এই পদক্ষেপ অপ্রত্যাশিত নয়, বিশেষ করে মাইক্রোসফটের নিজস্ব বিং সার্চ ইঞ্জিনের ওপেনএআই’র তৈরি চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি চালিত সংস্করণ চালুর পর থেকে। তবে, বৈশ্বিক সার্চ বাজারের ৯৩ দশমিক চার শতাংশ দখলে রাখা গুগলের এই পরিকল্পনা হয়ত তুলনামূলক বড় প্রভাব ফেলবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।
পিচাই আরও যোগ করেন, এআই চ্যাটিং ব্যবস্থাকে হুমকি নয় বরং একে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবসার বিস্তৃতি ছড়ানোর উপায় হিসেবে দেখেন তিনি।
“আর কিছু না হলেও, এই সুযোগের বিস্তৃতি আগের তুলনায় বড়।” –ওয়াল স্ট্রিটকে বলেন তিনি।
পিচাই অবশ্য এই ব্যবস্থা চালুর কোনো সম্ভাব্য দিন-তারিখ প্রকাশ করেননি। তবে এই বিষয়টি পরিষ্কার যে গুগল মাইক্রোসফট থেকে পিছিয়ে আছে। ওপেনএআই’র চ্যাটজিপিটি আত্মপ্রকাশের পর একটি ‘কোড রেড’ ঘোষণা দিতে বাধ্য হয় গুগল। কারণ তারা একে নিজস্ব সার্চ ব্যবসার অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে দেখেছে। পরবর্তীতে এর প্রমাণও মিলেছে, যখন মাইক্রোসফট নিজেদের বিং সার্চ ইঞ্জিনের জন্য ওপেনএআই’র সর্বশেষ জিপিটি-৪ মডেলের একটি সংস্করণ আত্মপ্রকাশ করে। পাশাপাশি, বেশ কিছু বিচিত্র সক্ষমতাও আছে এতে।
অন্যদিকে, গুগল ‘বার্ড’ নামে নিজস্ব আলাপচারিতামূলক এআই ব্যবস্থা চালু করলেও তা কেবল একটি স্ট্যান্ডঅ্যালোন সাইটের চ্যাটিং পণ্য হিসেবে এসেছে, সার্চ ইঞ্জিনে নয়। তবে এই বিষয়টি পরিষ্কার যে এটি চ্যাটজিপিটি থেকে পিছিয়ে। কারণ বিভিন্ন টুইটার বিজ্ঞাপনে ভুল উত্তর দেখাচ্ছিল এটি।
সম্প্রতি পিচাই বলেন, এই ব্যবধান কমানোর উদ্দেশ্যে গুগল শীঘ্রই একটি ‘সক্ষম’ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল চালু করবে।
পিচাইয়ের ২০ শতাংশ বেশি উৎপাদনশীল হয়ে ওঠার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুগল নিজস্ব কর্মী ছাঁটাই করলেও বিভিন্ন নতুন এআই পণ্য নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে কোম্পানিটি। স্পষ্ট করে বললে, কোম্পানির প্রাথমিক দুই এআই ইউনিট ‘গুগল ব্রেইন’ ও ‘ডিপমাইন্ড’-এর মধ্যে তুলনামূলক বেশি যৌথ কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা করেছে গুগল।
“এই খাতে আরও অনেক বেশি, ক্ষমতাধর সহায়তার প্রত্যাশা করুন। কারণ এইসব প্রচেষ্টার কয়েকটি তুলনামূলক বেশি গণনা-নিবিড় হবে। ফলে, এদের এক কাতারে সমন্বিত করাও বোধগম্য।” –বলেন তিনি।