জাপানের হিরোশিমায় রোববার (২১ মে) জি-৭ জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে কথা বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা, রুশ বাহিনীকে হটাতে পাল্টা আক্রমণ, এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাওয়াসহ নানান বিষয়ে কথা বলেছেন জেলেনস্কি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, রুশ সেনারা তার দেশে হামলা চালিয়ে সভ্যতাকে পদদলিত করেছে। তার ইচ্ছা, একদিন দখলকৃত সব শহর থেকে রুশ বাহিনীকে হটিয়ে দেবেন এবং সেগুলো পুনর্গঠন করবেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা স্বপ্ন দেখি উত্তর দিকে রাশিয়ার দখলকৃত যেসব অঞ্চল আমরা ফিরিয়ে নিয়েছি সেভাবে সব অঞ্চল ফিরিয়ে নেব। আমাদের অবশ্যই পূর্ব ও দক্ষিণ দিকের অঞ্চলগুলো ফিরে পেতে হবে। যে অঞ্চলগুলো রাশিয়ার দখলে আছে সেখানে আমাদের মানুষদের ফেরানোর স্বপ্ন দেখি।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি হিরোশিমায় এসেছি, যেন বিশ্ব ইউক্রেনের ঐক্যের ডাক শুনতে পায়। যেখানেই সভ্যতা আছে সেখানেই রাশিয়া সবকিছু পদদলিত করেছে।’
এছাড়া বিধ্বস্ত শহর বাখমুত নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। তার দাবি, এখনো শহরটিতে ইউক্রেনের সেনারা আছে। তবে কৌশলগত কারণে সবকিছু এখনই খোলাসা করতে পারবেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিশ্রুত যুদ্ধবিমান নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘পাইলটদের প্রশিক্ষণের জন্য আমাদের হাতে কয়েক মাস সময় আছে। তারা যতটা সম্ভব দক্ষ হতে পারে আমরা সে চেষ্টা করব। আমি বলতে পারি না আমরা কতগুলো বিমান পাব বা এ কার্যক্রম কখন শুরু হবে। কিন্তু আমরা এটি দ্রুততার সঙ্গে করব, কারণ এটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
জেলেনস্কি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ভারত, চীন বা ব্রাজিলের মতো দেশগুলো রাশিয়াকে অস্ত্র দিচ্ছে এমন কোনো প্রমাণ তারা পাননি।
রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে বহুল প্রতীক্ষিত পাল্টা আক্রমণ কখন শুরু হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘যখন পাল্টা আক্রমণ শুরু হবে রাশিয়া এটি টের পাবে।’ তিনি দাবি করেছেন, জি-৭ জোটের নেতাদের কাছ থেকে ‘ভালো অস্ত্র’ পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন।
অস্ত্র দেওয়ার জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তবে জেলেনস্কি সঙ্গে এও জানিয়েছেন, সাংবিধানিক এবং আইনগত বাধার কারণে হয়ত সব দেশ অস্ত্র দিতে পারবে না।
এরপর রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি নিয়ে কথা বলেছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের কোনো অঞ্চল রাশিয়ার হাতে তুলে দিয়ে শান্তি চুক্তিতে রাজি হবেন না তারা। কারণ এতে করে আন্তর্জাতিক আইন অক্ষুন্ন থাকবে না। এছাড়া রাশিয়া যদি ইউক্রেনে সাফল্য পায় তাহলে বিশ্বের অন্যান্য আগ্রাসনকারীরাও আস্কারা পাবেন বলে দাবি করেছেন তিনি।